বৃষ্টি পড়ছে দুকূল বেয়ে

প্রথম প্রকাশঃ এপ্রিল ২৩, ২০১৭ সময়ঃ ১০:৩০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:০১ অপরাহ্ণ

শারমিন আকতার:

‘বৃষ্টি ঝরছে দুকূল বেয়ে

বৃষ্টি পড়ছে দুকূল বেয়ে

আলো আর ছায়ার খেলায়

মনতো মেতেছে আনন্দ মেলায়’

চার দেয়ালের মাঝের বিশাল কাঁচের জানালা খোলা রেখে গুনগুন করে এরকমই কোনো গান গা্ইছেন আর বৃষ্টির স্থিরচিত্র, গতিচিত্র তুলে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। কেউ দরজা-জানালা বন্ধ করে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছেন আর কাঁচের জানালার ফাঁক দিয়ে বৃষ্টির মাতম উদযাপন করছেন।  ঘরে শুয়ে-বসে থেকে মুশলধারার বৃষ্টি দেখতে বেশ ভালোই লাগে। যারা উঁচু তলার মানুষ তাদের ভালো লাগাটা আরেকটু অন্যরকমের। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখছেন, কেউ একজন দৌঁড়ে ঘরে ফেরার চেষ্টা করছেন বৃষ্টি মাথায় নিয়ে। কেউবা ভিজে টইটুম্বুর। গাছগুলো বৃষ্টির ছোঁয়ায় এদিক-সেদিক দুলছে তো দুলছে। এই বুঝি ধপাস করে কারো মাথায় পড়ে যাবে। মনে মনে ভাবছেন, আজ ঘরে থেকে ভুল করিনি; ষোলোআনা পুশিয়ে দিয়েছে বজ্র-বৃষ্টি-মাতাল হাওয়ারা মিলে। এমন সময় এক কাপ টাটকা গরম চা হলে মন্দ হয় না।   

ঠিক অন্যরকম এক চিত্র একই সময়ে চলছিল নিচতলায়; আপনার পাশের বস্তিতে। যেখান থেকে ্সিতারা বেগম প্রতিদিন আপনার ঘরের সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে সকাল সকাল চলে আসে। এমন পাগলা হাওয়া আর দমকা ঝরো বৃষ্টিতে তার নড়বড়ে ঘরটি নিশ্চয় বারবার দুলে উঠছে। মাঝেমাঝে বুকে কাঁপন ধরা সেই বজ্রবিদ্যুতে হয়তো তিনি ভয়ে কেঁপে উঠছেন। এ ঘরটি ভেঙে পড়বে কিনা, পানি ঘরের ভেতর ঢুকে গেলে তিনি কী করবেন, কীভাবে রাতে ঘুমাবেন এসব ভাবতে ভাবতেই রাতের আঁধার কেটে যায় সিতারা বেগমের। 

জীবনের এ দুকূল ঘেরা কান্না-হাসির দোলদোলানী এভাবেই চলবে আজীবনভর। কেউ মানুক কিংবা না মানুক; এই সত্য। তবুও জীবন তার গতিতে এগিয়ে যাবে, বয়ে চলবে ভাঙা-গড়ার খেলায় প্রতিনিয়ত।

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G